টিউমার বাদ দেওয়া সত্ত্বেও ক্যান্সার ছাড়ে নি এই কিশোরকে, হাসি | Milaap
loans added to your basket
Total : 0
Pay Now

টিউমার বাদ দেওয়া সত্ত্বেও ক্যান্সার ছাড়ে নি এই কিশোরকে, হাসি মুখে সে মৃত্যুর সাথে লড়ছে প্রতিনিয়ত

“আমার ১৬ বছরের ছেলে, কৃষ্ণেন্দুর যেদিন স্কুল ছুটি থাকতো, ও আমার কাজের মাঝে আসতো আমায় খাবার দিয়ে যেতে। এরম ই একটা দিনে, দুপুর পার হয়ে যাওয়ার পর ও আমার ছেলে খাবার নিয়ে আসে নি।  আমাদের বাড়িতে একটাই ফোন যেটা আমি কাজের যাওয়ার সময় নিয়ে যাই ,তাই ফোন করে যে  একটা খবর নেবো তাও সম্ভব ছিল না।  বাড়িতে এসে যে এই অবস্থায় ছেলেকে দেখবো এটা আমি কল্পনাই করতে পারি নি। স্ত্রী ছেলের পাশে বসে অস্বাভাবিক কান্নাকাটি করছিলো।  আমার ছেলের দুটো পা-ই অবশ হয়ে গিয়েছিলো আর ও চুপ করে পায়ের দিকে তাকিয়ে বসে ছিল। কিছুক্ষনের জন্য আমি যেন মূর্তির হয়ে গেছিলাম”- বিশ্বনাথ, কৃষ্ণেন্দুর বাবা।



“আমরা গরীব হলেও আমার ছেলের স্বপ্ন একেবারেই ছোট ছিল না। ও বড়  হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। বন্দনা আর আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি যে যাতে আমাদের দারিদ্র কখনো ওর স্বপ্নের মাঝে না আসে। আমার একমাত্র ছেলেটা খুব হাসিখুশি ছিল। এখনো ওকে দেখে বোঝা যায় না যে ও একটা এতো বড় রোগের  সাথে লড়াই করছে প্রতিদিন। ক্যান্সার ওর বাঁচার ইচ্ছে আর মুখের হাসিটা ম্লান করতে পারে নি।”

ক্যান্সার কৃষ্ণেন্দু কে শারীরিক ভাবে কাবু করলেও, তার অসম্ভব মনের জোর ভাঙতে পারে নি

এই ঘটনার ২ দিন আগে কৃষ্ণেন্দু প্রচন্ড ঘাড়ে ব্যাথায় ভুগছিল। বিশ্বনাথ যখন ওকে নিয়ে গেলেন হাসপাতালে, রিপোর্ট দেখে ওনার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় - আগের দিন অব্দি যেই ছেলেটা একেবারে সুস্থ ছিল, তার ঘাড়ে হঠাৎ-ই এক টিউমার দেখা দিয়েছে। আরও কিছু পরীক্ষা করানোর পর ওনারা জানতে পারেন যে তাদের একমাত্র ছেলের ই-উইংস সার্কোমা নামক এক ভয়াবহ ক্যান্সার এ আক্রান্ত আর এই টিউমার তার ই এক লক্ষণ।

“ছেলের ক্যান্সার শুনে আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই ভীষণ ভেঙে পড়ি। সব থেকে চিন্তার বিষয় একটাই ছিল, আমরা ওকে বাঁচানোর টাকা কিভাবে জোগাড় করবো। কিন্তু সব জেনে আমার ছেলের প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই। আমরা ভেঙে গেলেও ও এক ফোটাও ঘাবড়ায় নি।  ওই আমাদের বলতে থাকে বেশি চিন্তা না করতে। ওর মা কে ঠান্ডা করে, বলে সব ঠিক হয়ে যাবে। ওর অসম্ভব মনের  জোর দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই।”

টিউমার বাদ দেওয়াই যথেষ্ট ছিল না, আগামী দিনের চিকিৎসা ছাড়া এই কিশোর মারাও যেতে পারে

যে ক্যান্সার-এর দ্বারা কৃষ্ণেন্দু আক্রান্ত সেটি অত্যন্ত দ্রুত ভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে তার গোটা শরীরে। ক্যান্সার ধরা পড়ার পর খুব কম সময় ছিল ওর হাতে। টিউমার দ্রুত বাদ দেয়া অতি আবশ্যক ছিল। নাহলে কয়েক সপ্তাহের বেশি ওকে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে যেত। বিশ্বনাথ কোনো রকমে তার ছেলের  টিউমার টার অপারেশন করান। কিন্তু তার পরেও সে পুরোপুরি ভাবে ক্যান্সার মুক্ত নয়। দীর্ঘায়িত কেমোথেরাপি ই একমাত্র পারে এই কিশোরকে ক্যান্সার মুক্ত করতে। এটা ছাড়া সে শুধু প্যারালাইস্ড ই নয়, মারাও যেতে পারে।

কৃষ্ণেন্দুর ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকেই আস্তে আস্তে সে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে। তার সাইকেল ছিল তার চিরসঙ্গী।  এখন সাইকেল চালানো তো দূরের কথা, সে ঠিক করে হাঁটতেই পারে না। ইতিমধ্যেই কৃষ্ণেন্দ্রুর ২৮ টা রেডিওথেরাপির সাইকেল সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। তুবও ক্যান্সার এর সাথে তার লড়াই অনেকটা বাকি এখনো।




“আমাদের আত্মীয় স্বজনরা সবাই এই খবরটা পেয়ে প্রচন্ড ভেঙে পড়েছে। কৃষ্ণেন্দু পড়াশোনা করে বলে সবটাই বোঝে, তাই আর প্রশ্ন ও করে না। ও আর আগের মতো অত কোথাও বলে না। প্রতিদিন যেন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইটা আরও একটু জোরদার হয়ে যাচ্ছে। কতদিন ওর চিকিৎসাটা টানা সম্ভব হবে এ আমি জানি না।”

প্রায় ৯ মাস ধরে কৃষ্ণেন্দুর মা বাবা কাজ করতে পারছেন না, আকণ্ঠ ধারে ডুবে আছে এই পরিবার

বিশ্বনাথ একজন মিস্তিরি।  যেদিন উনি কাজ পান, খালি ওই দিন গুলি ই উনি বাড়ি তে কিছু টাকা আনতে পারেন। ওনার স্ত্রী, বন্দনা, বিড়ি বাঁধেন এবং তাতে ২৫ টাকা প্রতিদিন রোজকার করেন।  বিগত জানুয়ারী থেকে ওনারা দুজনেই কাজে যেতে পারেন নি। এতোটাই ধার দেনার মধ্যে ডুবে আছেন তাঁরা যে দুবেলা দুমুঠো খাবারের পয়সা পর্যন্ত নেই ওনাদের কাছে।

“আমার ছেলের অনেক স্বপ্ন। ও জীবনে অনেক কিছু করতে চায়।  ও প্রায় ই আমায় বলে, ‘বাবা তুমি চিন্তা কোরো না। আমি বড় হয়ে ভালো চাকরি করে সব ঠিক করে দেব।  তখন আর তোমাদের কাজ করতে হবে না। তুমি দেখো আমি অনেক বড় হবো।’ ওকে বাঁচাতে পারবো কিনা জানি না, শিক্ষা তো দূরের কথা। এত ধার দেনার মধ্যে আরও সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা জোগাড় করা আমার পক্ষে অসম্ভব। আমার ছেলেটার কিছু হয়ে গেলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো জানি না।”


আপনি কিভাবে সহায়তা করতে পারেন

১৬ বছরের এই কিশোর এক ভয়াবহ ক্যান্সার এর সাথে যুদ্ধ করছে প্রতিনিয়ত। তার টিউমার অপারেশন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও, দীর্ঘায়িত কেমোথেরাপি ছাড়া তাকে বাঁচানো অসম্ভব। কৃষ্ণেন্দুর বাবা ধার দেনা করে এই অব্দি কোনোমতে ছেলেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।  চিকিৎসার খরচ ওনার পক্ষে আর কোনোমতেই ওঠানো সম্ভব না।

আপনার সাহায্য এই কিশোরকে এক নতুন জীবন দান করতে পারে

সাপোর্টিং ডকুমেন্ট 



এই ঘটনার সুনির্দিষ্ট হাসপাতালটি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মেডিক্যাল টিম দ্বারা যাচাই করা হয়েছে। চিকিত্সা বা সংশ্লিষ্ট খরচ সম্পর্কে কোন স্পষ্টীকরণের জন্য, প্রচারাভিযান সংগঠক বা মেডিকেল টিমের সাথে যোগাযোগ করুন

কৃষ্ণেন্দুকে বাঁচাতে এখানে ক্লিক করুন